মিয়ানমারের সঙ্গে অনুষ্ঠেয় বৈঠক অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জানিয়েছেন :পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন
বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বৃহস্পতিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমারের সঙ্গে অনুষ্ঠেয় বৈঠক অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
সচিব বলেন, আগের বার তারা একটা সময় দিয়েছিল, ৪ তারিখ একটা নির্দিষ্ট সময়। এখন মিয়ানমারের পরিবর্তিত এ পরিস্থিতিতে সেই সময়টা থাকবে বা ওইদিন বৈঠক হবে কিনা সেটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমাদের প্রেফারেন্স ছিল ওইদিন হওয়ার ব্যাপারে হয়তো কোনো লজিস্টিকেল ইস্যু থাকতেও পারে,
যেহেতু একটা পরিবর্তন হয়েও গেছে তাদের। তারপরও দ্রুততম সময়ে এ মিটিংটি করে আর বাকি যে রোডম্যাপ যেটা আমরা করেছিলাম মিয়ানমার রাষ্ট্রের সঙ্গে সেটাই যাতে বলবৎ থাকে সেটাও আমরা চাইনিজদের (চীন) বলেছিলাম।
নতুন সরকারের সঙ্গে ঢাকার এখনো কোনো যোগাযোগ হয়নি বলেও জানান তিনি।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকে মিয়ানমারের গণতন্ত্রের পাশাপাশি রোহিঙ্গা ইস্যুটিও আলোচনার প্রত্যাশা বাংলাদেশের বলে জানান তিনি।
এর আগে গতমাসের মাসের ১৯ তারিখ চীনের মধ্যস্থতায় দু'দেশের মধ্যে বৈঠকে বছরের মাঝামাঝি প্রত্যাবাসনের সিদ্ধান্ত হলেও কী প্রক্রিয়ায় সেটা হবে তা নিয়ে একমত হতে পারেনি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। বাংলাদেশের দাবি অনুযায়ী,
একসঙ্গে এক গ্রামের সবাইকে প্রত্যাবাসন করার পক্ষে মতে আর সঙ্গে একমত এ দেশের কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গাদেরও। এর আগে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক হলেও এ প্রথম সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়। এর সঙ্গে বাড়তি যোগ হয়েছিল এবার চীনের মধ্যস্থতা।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে জাতিসংঘের স্বাধীন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গণহারে হত্যা, ধর্ষণ এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে রেহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে পুরোপুরি নির্মূল করাই ছিল ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে সেনা অভিযানের মূল উদ্দেশ্য।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।
আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। ২০১৯ সালে দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা।